2007年5月6日日曜日

রিভিউ-১: বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এনাটমি

বিশ্বক্রিকেটের আরেক দুর্গের পতন ঘটল কাল বাঙালী সেনাদের হাতে। ঝড়ে-বক বা ফ্লুক বলার কিছুই নেই, পুরো ম্যাচে এমন কিছু ঘটেনি যে হঠাৎ করে খেলার মোড় ঘুরে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে যাবার পর যেটা দরকার ছিল, তা হলো ফাইটিং স্কোর। সেটা তারা করতে পেরেছিল, কারণ সকালের স্লো পিচের সুবিধা নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশের ইনিংসকে ছোট স্কোরে আটকে রাখতে পারেনি। ক্যারিবিয়ায় দ্্বিতীয় ইনিংসে পিচ স্লো হবে, কাজেই স্পিনারদের ভালভাবে ব্যাবহার করতে পারলে ম্যাচের জয় বের করে আনা যে সম্ভব সেটা বাংলাদেশের 250 এর ইনিংসের উপর ভিত্তি করে ভাবা যাচ্ছিল। বাংলাদেশ অধিনায়কের জন্য যেটা সবচেয়ে সুখকর ছিল তা হলো রফিক-রাজ্জাকের বল বেশ ভাল ঘুরেছে। প্রতিপক্ষের বাঘা-বাঘা ব্যাটসম্যানরাও বেশ সমীহ করে খেলেছে এই দুই স্পিনারকে। কাজেই মিডিয়ার 'আপসেট' বলে আপসেট হবার কিছু নেই।

কিছুদিন আগেও প্রথম 30 রানের মধ্যে 3 উইকেট পড়ে যাওয়াটা ছিল বাংলাদেশ দলের জন্য নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। 3 উইকেট পড়ার পর একটু ধতস্থ হয়, 60 এর দিকে 4 নম্বরটা পড়ে। তারপর 100 এর মধ্যে 6 টা শেষ। এরপর খালেদ মাসুদ নেমে একটু খেলতেন, সেখানে তার রানিং বিটউইন উইকেটে ভাল দক্ষতার সাথে সাথে প্রতিপক্ষের একটু গা ছাড়া ভাবটাও ফ্যাক্টর হতো। তাও 130-40 এর দিকে যখন 8 টা উইটেট নেই হয়ে যেত, তখন রফিক ব্যাট হাতে বাড়ি দেবে কি দেবেনা তার উপর নির্ভর করত বাংলাদেশ কি 150 এর ঘরে থেমে যাবে নাকি 180-190 এর মতো করতে পারবে। তো এই স্কোরটা নিয়ে যখন প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ে ডাকা হয়, তখন খেলোয়াড়দের মধ্যে মনোবল বলে কিছু থাকেনা। ফাইটিং স্পিরিট নিয়ে ফিলডিং করা যায়না, খেলোয়াড়রাও মানুষ। জেতার চান্স খুব কম থাকলে সেখানে শরীর উজাড় করে খাটা সম্ভব না। বোলাররাও প্ল্যানমতো বোলিং করতে পারেনা।

বাংলাদেশের এই বড়জোর 180-190 এর আশেপাশে ঘোরাফেরা করার পেছনে দুটো বড় কারণ ছিল।
1. ওপেনিং জুটিটা 10-15 এর মধ্যেই চলে যেত।
2. বড় পার্টনারশীপ নেই।

ওপেনিং জুটিতে ভাল স্ট্রোকসমৃদ্ধ শাহরিয়ার নাফিস দূর্বল দলের জন্য ভাল, কারণ শুরুথেকেই পেটানো যায়। পরপর কয়েকটা ভাল লাইন-লেংথের বল আসেনা যেহেতু, তাই তার খুবই আনঅর্থডক্স ব্যাটিং দিয়েও ফ্লাইং স্টার্ট টাইপের কিছু শুরু করা যায়। বিশ্বকাপের আগের কয়েক সিরিজ মেইনলি জিম্বাবুয়ে-কেনিয়ার সাথে খেলা বাংলাদেশ তাই নাফিস-ইলু্যশানে ভুগছিল খুব বেশি। তবে ওপেনিং ব্যাটসম্যান যদি টপ পেসবলে ক্রসব্যাটে খেলে, তাহলে সে বেশীক্ষণ টিকবে এটা আশা করা ঠিকন আর এখানেই শাহরিয়ার নাফিসকে নিয়ে সমস্যা। কারণ হলো আমাদের ওপেনিংয়ে একটা স্ট্যাবল পার্টনারশীপ দরকার। বিশেষ করে যখন দল আগে ব্যাট করবে, কারণ তানাহলে ইনিংস খুব সহজেই দুমড়ে-মুচড়ে যায় -- সেটা আমরা অনেক দেখেছি।

আরেকটা বড় ব্যাপার হলো বিগ পার্টনারশিপ। বিগ বলতে এখানে শুধু রানের অংকেই বুঝাচ্ছিনা, ওভারের হিসেবেও। আমার ব্যাক্তিগত স্পেকুলেশানে এটা হওয়া উচিৎ 15 ওভারের বেশী সময় ধরে, এবং রান আসা উচিৎ 75 এর বেশী। খেয়াল করে দেখবেন ওয়ানডেতে এরকম একটা পার্টনারশিপ হলেই হয়। পাকিস্তানের সাথে বিদ্যুৎ-অপি, কার্ডিফে হাবিবুল-আশরাফুলের সেই লম্বা একঘেয়ে জুটি, নিউজিল্যান্ডের সাথে তামিম-জাভেদ, ভারতের সাথে সাকিব-মুশফিক, কাল দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে আশরাফুল -আফতাব --এরকম একটা জুটিই প্রতিপক্ষের সমীহ তুলে নিতে পারে। সমীহ তুলে নিলেই হলো, রান আসবেই। আপনি চিন্তা করুন, যতই মুখে বলুক বাংলাদেশের সাথে খেলতে নামলে এখনও বড় দলগুলোর সব বোলাররাই, তককে তককে থাকে 'আজ একটা স্পেলই করব'। সেই বোলাররা যখন 15-20 ওভার ধরে দেখে কেউ আউট হচ্ছেনা, তখন ধৈর্যচু্যতিটা অবশ্যম্ভাবী। কারণ, তারাও মানুষ; যন্ত্র না! বোলারদের একবার ধৈর্যচ্যুতি ঘটাতে পারলেই হলো। বোলারদের সম্পর্কে বলা হয় (বিশেষ করে যখন গ্লেন ম্যাকগ্রা বিশ্লেষণ হয় তখন) লাইনে রেখে লেংথ একটু বাড়িয়ে কমিয়ে গুড লাইন-লেংথ বল ফেলে যাও একটার পর একটা। ব্যাটসম্যান একসময় খেলতে যাবেই, আর তখনই হাতে উইকেট। ব্যাটসম্যানদের সম্পর্কেও বলা যায়, টুকটাক এক করে নিতে থাক, যাস্ট উইকেটটা দিয়ে এসনা। বোলাররা একটু পরে লাইন-লেংথ হারাবেই। এই ধৈর্যের খেলায় কে আগে হাল ছেড়ে দেয়, সেটাই ক্রিকেট। অস্ট্রেলিয়া দলের এই জায়গাটা অসাধারণ, 60 রানে 6 উইকেট গেলেও দেখা যায় 7ম জুটিতে 150-60 তুলে ফেলল।

তো, বাংলাদেশ যেদিন উপরের দুটো কন্ডিশান পূরণ করে সেদিন জেতে বা জেতার খুব কাছে চলে যায়। সেজন্যই ওপেনার জাভেদ ওমরের ব্যাটিং স্টাইল বা প্রতিভা কোনটাই আমার পছন্দ না হবার পরও মনে হয় থাকুক আরও কিছুদিন, ও রান না নিয়ে একপ্রান্ত আগলে ধরে রাখলেই হলো। তবে ঢাকার লীগে এবার জুনায়েদ আর ইমতিয়াজ নামে দুজন ওপেনার (মোহামেডানের) খুব ভাল করেছে, ওদের ব্যাটিং দেখেছি -- বেশ পরিণত। 'এ' দলে চান্স দিয়ে পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে।
তামিম খুবই ট্যালেন্টেড, ব্যাটিংয়ের সময় যে বডি মুভমেন্ট সেটাতে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের অনেকদিন পর আরেকজনকে পেল বাংলাদেশ, এবং তামিমের স্ট্রোক অনেক অনেক ভাল। দরকার টেম্পারমেন্ট, আর বল বিচার করে খেলার ক্ষমতা। যেভাবে সে যখন তখন ডাউন দ্য উইকেটে এসে ব্যাট ঘুরায়, আমার সন্দেহ সে বল ছোঁড়ার সময় বোলারের হাতের দিকে আসলে খেয়াল করে কিনা। আরেকটা হলো মোটামুটি প্রতি তিন বলে একবার ওয়াইলড স্ম্যাশ চালায়, বল লেগে গেলে তো গেলই আর না গেলে কপালই ভরসা। এজায়গাগুলো মেরামত করলে তামিম বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যাটসম্যান হতে পারবে, কোন সন্দেহ নেই।
ওয়ান ডাউনে আফতাব আসে সাধারণত, তবে তার লফটেড শট খেলার ঝোঁক খুব বেশী। তাই একটু স্লো পিচ বা বড় মাঠ হলে তার কাছে লম্বা ইনিংস তো দূরের কথা ভাল স্কোর আশা না করাই ভাল। অথচ, এই ছেলেটার রানিং বিটউইন উইকেট অসাধারণ, খুবই এ্যাথলেটিক। তাকে শুধুশুধু পাওয়ারপ্লেতে গিয়ে পিটিয়ে আসার ব্যাপারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। গেমপ্ল্যান হিসেবে ভাল হতে পারে, তবে আফতাবের এরকম এক্সক্লুসিভ ব্যাবহার একটা সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ারের ইতি টানবে খুব তাড়াতাড়ি। তবে এখনকার স্টাইলে 1ম জুটি খুব দ্্রুত পড়ে গেলে বা 15 ওভারের বেশী টিকে গেলে আফতাবকে বেশ পরের অর্ডারে নামানোই ভাল। কারণ, দ্্রুত পড়ে গেলে পরের জুটি টেকাতে হবে, বেশী টিকে গেলে ধারাবাহিকতা নষ্ট করার মানে হয়না। পাওয়ার প্লেতে আফতাব লফটেড শট খেলবেই। আর আজকালকার ক্রিকেট ফিলডাররা এত পাকা যে ভেতরের বৃত্তের বেশ বাইরে ভেসে ওঠা বলও ঠিক দৌড়ে ধরে ফেলে। আফতাব তুলে দেয়ও সেরকম একদম আকাশচুম্বি, ফিলডারের দৌড়ানোর মতো অনেক সময় থাকে। নাদিফ চৌধুরী দলে ঠিকমতো ঢুকে গেলে আফতাবের অবস্থান আসলেই নড়বড়ে হয়ে যাবে, তার এখন নিজের স্বার্থেই লম্বা, স্টিডি ইনিংসে অভ্যস্ত হওয়া উচিৎ। বিগ হিট করে দর্শকদের সে যেভাবে এন্টারটেইন করে সেটা ছোট দলগুলোর জন্য রেখে দেয়াই ভাল।
সাকিবের মধ্যে আমি সবচেয়ে ভাল সম্ভাবন াদেখি, পরিপূর্ন অলরাউন্ডার। রানিং বিটউইন উইকেট খুবই ভাল, বল দেখে খেলে তাই খুব ভয়াবহ ডেলিভারি না হলে প্রতি বলেই একরান নেয়ার ক্ষমতা রাখে আর তার সাথে বেশ ভাল স্ট্রোক। পারফেক্ট মিডল অর্ডার, সাকিবকে যাস্ট বলে দিলেই হয় প্রথম 30 রান পর্যন্ত বিগ হিটে না যাওয়ার জন্য।
আশরাফুল জুয়ার কার্ড, তার একটা দিন আসে যেদিন তার ব্যাটবলের টাইমিং মিলে যায়। সেদিন সে অপ্রতিরোধ্য। অন্যান্যদিন মিসটাইমড শটে ক্যাচ দিয়ে বাড়ি ফিরে। আশরাফুল খেলার মাঝে যেভাবে বারবার উপরের দিকে তাকায়, মনেহয় ঠিক টাইমিংটা প্রর্থনা করছে। প্রার্থনা করুক, তবে আমার মনে হয় যেদিন টাইমিং ঠিক হয়না সেদিন অবসেশানে না ভুগে আরেকটু সময় নিয়ে টাইমিং মিলানো উচিৎ। ফুটওয়ার্কও স্লাইডলি এ্যাডজাস্ট করা উচিৎ। সে সাধারণত একটা বিগ হিটে গিয়ে টাইমিংয়ের রিদম মেলাতে চায়। এটা সবসময় কাজ করেনা।
হাবিবুল বাশার নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন। তবে অধিনায়কত্বের চাপে তিনি সেই ফর্ম ধরে রাখতে পারেননি। তার সেই স্ট্রোক প্লে এবার দেখা যায়নি, তাকে প্রতি ম্যাচেই খুবই টেনসড মনে হয়েছে। সব খেলোয়াড়েরই ব্যাডপ্যাচ যায়, তারটা এখন যাচ্ছে। আমার মনে হয় এখন ঢালাওভাবে সমালোচনা না করে তার পাশে অন্যদের দাঁড়ানো উচিৎ। কারণ, বিগ পার্টনারশিপ বলে যে জিনিসটা অন্তত একবার দরকার প্রতি ইনিংসে, সেটার জন্য হাবিবুল-সাকিব-আশরাফুল-আফতাব এদের উপর ভরসা করা যায়। আশা করি শীঘ্রই তিনি ফর্ম ফিরে পাবেন। তবে নিঃসন্দেহে দলের খুব ভাল ক্যাপ্টেন তিনি, প্রত্যেক খেলোয়াড়ের সাথে চমৎকার ম্যান-টু-ম্যান আন্ডার্স্ট্যান্ডিং রয়েছে তার। আমি তাকে আরও কিছুদিন বাংলাদেশ দলের ক্যাপ্টেন হিসেবে দেখার পক্ষে।
মুশফিকুর রহিমকে এখন থেকেই দলে রেখে পেলে পেলে বড় করতে হবে, ্রিীলংকার মডেল হতে পারে। কীপার কাম ভাল ব্যাটসম্যান। খালেদ মাসুদের যোগ্য উত্তরসুরী। তবে সে খালেদ মাসুদের চেয়ে অনেক বড় বড় ইনিংস উপহার দেবে দলকে ভবিষ্যতে। ভীষন মেধাবী, কাল রাজ্জাকের বলের ঘুর্নিতে যখনই প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানরা পরাভূত হচ্ছিল, তখনই যেন মজা পেয়ে খিকখিক করে হেসে 'গুড বল, বয়' বলে চীৎকার করছিল। এটা বেশ ট্রিকি স্লেজিং ছিল, বাংলাদেশের বাচ্চা চেহারার কীপারের ওরকম হাসি বারবার শুনলে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানের পিত্তি জ্বলে যাওয়াটা স্বাভাবিক। আর পিত্তি জ্বললে, হাতও উলটো-পালটা চলে।
রফিক-মাশরাফি বাংলাদেশ দলের বিগ এ্যাসেট; বোলিংয়ে যেমন সবসময় ভরসা করা যায়, দিন ভাল গেলে ব্যাটিংয়েও চমৎকার। টপ আর মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা যদি 44-45 ওভার পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে পারে ইনিংস, তাহলে রফিক বা মাশরাফির একজন জ্বলে উঠলেই তান্ডব বয়ে যাবে। সামপ্রতিককালের নিউজিল্যান্ড বা দক্ষিণ আফ্রিকার খেলায় সেটাই দেখেছি, স্লগে 4 উইকেট হাতে থাকলে এদের একজন জলে উঠবে আশা করা যায়ই।
বোলিংয়ে সাকিব আল হাসান একটা ভাল সংযুক্তি; তেমন ভয়াবহ স্পিন না, কিন্তু দেদারসে মারার জন্য মোটেও নিরাপদ বল না। 20 থেকে 40 ওভার কাটিয়ে দেয়ার জন্য ভাল বোলার। বাংলাদেশের বোলিং এ্যাটাকে যেহেতুস্পিন একটা বিগ গেমপ্ল্যান আর আমাদের রফিক-রাজ্জাকের মতো খুব উঁচু লেভেলের দুজন স্পিনার আছে, তাই এখনকার স্টাইলটাই যথেষ্ট।
এবারের বিশ্বকাপে আমার মনে হয়েছে বাংলাদেশের বোলিং এ্যাটাক বড় আট দলের যেকোনটারই সমকক্ষ, যাস্ট মাশরাফি মার খেলে লাইন-লেংথ হারিয়ে ফেলে। তবে বোলারদের যে মানুষখেকো স্বভাবটা দরকার তা মাশরাফির আছে যথেষ্ট, আর বাকীটা মাথার ব্যাবহার। রাসেল চমৎকার ব্রিলিয়ান্ট বোলার, লাইন ভাল, লেংথে যদিও মাঝেমাঝে গোলমাল হয়। তবে পিচভেদে রাসেলের বল মাঝেমাঝে ব্যাটসম্যানদের জন্য খুব আদর্শ বল হয়ে যায়; এখানে অবশ্য জুয়া খেলা ছাড়া কিছু করার নেই। তবে নিয়মিত বিরতিতে রাসেল আর রাজীবকে চান্স দেয়া উচিৎ, নাইলে একটাতে মরচে পড়ে যাবে। বোলিং এ্যাটাকে হাবিবুল কোন ওয়াইলড কার্ড ব্যাবহার করেননা, আসলে করতে হয়নি। কারণ গতকালই ছিল তার প্রথম চ্যালেঞ্জ, এবং খুব চমৎকারভাবে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছে বাংলাদেশের বোলার আর ফিলডাররা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়েছে ওদের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে একম্যাচে 2 টা রান আউট, তাও একটা স্ট্রেট থ্রো -- আমাদের দলের ফিলডিং বেশ উঁচুমানের সেটা জন্টিরোডসও মানবেন।

আসলে, আমাদের দলটা খুবই প্রতিভাবান আর সামর্থ্যও আছে বেশ ভাল। আগে ব্যাটিং পেলে দরকার ব্যাটিংয়ে অনেক অনেক বেশী ধৈর্য্য। একটা ভাল ওপেনিং, (40 এর বেশী, 10 ওভারের বেশী খেলে) আর প্রথম 5 উইকেটের মধ্যে েকটা বড় জুটি (75 এর বেশী, 15 ওভারের বেশী)। বিশ্বের যেকোন বোলিং শক্তির বিরুদ্ধে সেটা করার ক্ষমতা আমাদের রয়েছে। এবং সেটা করতে পারলে দলের ফিলডিং অসাধারণ একটা রূপ ধারণ করে, খেলোয়াড়রা বুঝতে পারে আজ জেতার একটা চান্স আছে,ওরা জান দিয়ে দেয়।
আগে ফিলডিং পেলে যাস্ট এটার (বিগ ওপেনিং, বিগ পার্টনারশীপ) উলটোটা করার চেষ্টা, অর্থাৎ প্রতিপক্ষ যাতে এটা না করতে পারে তার চেষ্টা করা, তবে সেটা জেনেরালি অনেক কঠিন। সেকারণেই টসে জিতলে সবাই ব্যাটিং নেয় সাধারণত। তবে ক্যারিবিয়ার সকালের ভেজা পিচের সুবিধা নেয়ার জন্য এখানে সবাই ফিলডিং নিচ্ছে । সেক্ষেত্রে আগে ফিলডিং পেলে মাশরাফি আর রাসেলের উপর নির্ভর করে দলের অনেকটুকুই।

দুর্গ ফেলানোর বাকী আর দুটো মাত্র -- ইংল্যান্ড আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ। খাপে খাপ মিলে গেছে। ফেলে দিক এই ক্যারিবিয়ান অপারেশানেই। হোয়াটমোরও চলে যাই চলে যাই করছেন, তবে বলব হোয়াটমোর চলে গেলেও যাতে অস্ট্রেলিয়ান কোচ আনা হয়। ওদের প্রফেশনালিজমই অন্যরকম, বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের বাকী সবটাই আছে, প্রফেশনাল এ্যাটিচিউডটা যত ভাল হবে এদল তত উপরে উঠে যাবে। তবে আমি হোয়াটমোরকে রাখার পক্ষেই। যে দেশে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয় অন্যায়ভাবে, সেদেশের 15 কোটি হাঢ়াভাতের মনের প্রায় সবটুকু সমষ্টিগত আনন্দের এই ক্রিকেটের জন্য হোয়াটমোরকে একটা বড়সড় অফার দেয়াই যায়। বিসিবির উচিৎ তাকে ধরে রাখার সবরকম চেষ্টা করা।

শুভকামনা, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। অভিনন্দন।



২০০৭-০৪-০৮

4 件のコメント:

শামীম さんのコメント...

লেখাটা অনেক আগেই পড়েছি ... দারুন পরিপূর্ণ একটা বিশ্লেষন মনে হয়েছিল। ...

মন্তব্য করে আমার ঠিকানা রেখে গেলাম।

মিয়া মোহাম্মদ হুসাইনুজ্জামান (সামহোয়্যারইন-এ এই নামে ছিলাম)

শামীম さんのコメント...

কপিরাইট গেসবলের উত্তর:
১. অভিধানের ভেতরের উদাহরণ মূলক বাক্যগুলোতে যতদুর সম্ভব সর্বনামের বদলে প্রকাশকের নাম/ঠিকানা উল্লেখ করে উদাহরণ দেয়া। যেমন: একটা উদাহরণ: এই অভিধানের প্রকাশক জ্বিনের বাদশা ভাত তেমন একটা পছন্দ করেন না।
যিনি কপি মারছেন, উনি যদি প্রতিটি এন্ট্রি থেকে এগুলো বাদ দিতে চায় তবে তো আর কপির উদ্দেশ্য ব্যহত হল ..... খাইট্টা খাও আমার মত ;)
২. প্রকাশ করামাত্র প্যাটেন্ট রেজিস্ট্রি করতে হবে। পরবর্তীতে যেন আইনগত সুবিধা পাওয়া যায়।

শামীম さんのコメント...

গেসবল-৫: কপিরাইট ঝামেলার উত্তর
৩. বিভিন্ন নামকরা অভিধানের মত, উচ্চারন প্রকাশের জন্য কিছু মৌলিক ফোনেটিক সিম্বল উদ্ভাবন করা। তারপর সেই সিম্বলগুলো প্যাটেন্ট করে নেয়া।
-- প্রতিটা এন্ট্রি যদি এইভাবে কপিকারক ব্যাটার নতুন ভাবে উচ্চারণ ব্যাখ্যা করা লাগে .. তাইলে আর কি.. এর চাইতে সহজ হৈল নিজে থেকে একটা লেখা।

শামীম さんのコメント...

গেসবল-৫: কপিরাইট ঝামেলা

৪. দীর্ঘমেয়াদী টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা: গুরুত্বপূর্ণ হইল যে প্রকাশ করার সময় একটা প্রেস কনফারেন্স করে সেটা প্রচার করা। এইটা মনে হওয়ার কারণ -- কিছুদিন আগে গায়ক বাপ্পা মজুমদারের একটা ক্যাসেট বের হয়। আমার মত অনেক ফ্যান ওটা কিনে দেখে পুরান কতগুলো জনপ্রিয় গানের সংকলন। পরবর্তীতে গায়ককে ফোন করে কমপ্লিমেন্ট দিলে উনি তো পুরা আকাশ থেকে পড়ছেন। কারণ, ক্যাসেটটির প্রকাশন গায়ককে না জানিয়েই.... চামে চিকনে মেরে দিয়েছিলেন।

তাই, কোন অ্যালবাম বা বই-এর মোড়ক উদ্ভোদন অনুষ্ঠান করার একটা চল পশ্চিমা বিশ্বের মত এখানেও চালু করতে হবে। তাহলে ধীরে ধীরে গ্রাহক ও ক্রেতাদের মনে এটা গেঁথে যাবে যে, মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান/প্রেস কনফারেন্সে প্রকাশিত খবরের রেফারেন্স ছাড়া প্রকাশিত কোন কিচুই কেনার আইনগত ঝামেলা আছে। বিক্রেতাও এই সংক্রান্ত একটা পেপার কাটিং রাখবেন সবসময় - যা চাহিবা মাত্র ক্রেতাকে দেখাতে বাধ্য থাকিবে।

নকলিস্ট নিশ্চয়ই প্রেস কনফারেন্স করে প্রকাশ করতে পারবে না ... কারণ চোরের জন্য পিছনের দরজা।